মালনীছড়া চা বাগান ভ্রমণ উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন চা বাগান


মালনীছড়া চা বাগান ভ্রমণ উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন চা বাগান



মালনীছড়া চা বাগান উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও প্রথম  চা বাগান। আজকের ভ্রমণ ব্লগে আমি তুলে ধরব রহস্যময়ী মালনীছড়া চা বাগানের অজানা কথা, ইতিহাস, বর্তমান অবস্থা ও আমার অভিজ্ঞতা। প্রথমে এর ইতিহাস সম্পর্কে কিছু কথা বলা যাক যা এখনো অনেকের অজানা রয়ে গেছে।
Malnichora tea garden





১৮ শতাব্দীর সময় পুরো বিশ্বে যখন ইংরেজদের আধিপত্য ছিলো ও বিশ্ব অর্থনীতির লাগাম তাদের হাতে ছিলো তখন তাদের কয়েকদল গবেষক বাংলাদেশের প্রাচীন বৃহত্তর সিলেটে এসেছিলো। তারা তখন বুঝতে পারে সিলেটের ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থান যেমন এখানে রয়েছে মাঝারি আকারের উঁচু নিচু টিলা ও পাহাড় পাশাপাশি সিলেটের মাটি বিশেষ করে চা উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে উপযোগী হবে। এই প্রাক্কালে ইউরোপে তখন চায়ের বেশ কদর ছিলো তাই তারা বুঝতে পেরেছিলো এখানকার চায়ের রং, গন্ধ  ও স্বাদ অনেক আলাদা অন্য জায়গার চেয়ে । আরো একটি কারণ রয়েছে তাদের চা শিল্প গড়ে তোলার পিছনে সিলেটে সেটি হলো চা শ্রমিকের ও উৎপাদন খরচ কম। যদিও অনেক তথ্য থেকে পাওয়া যায় ইংরেজরা বিপুল পরিমাণ নৃগোষ্ঠী শ্রমিক  এনেছিলা জাহাজে করে আফ্রিকা মহাদেশ থেকে। তখন মানুষদের বিনামূল্যে চা পান করার সুযোগ দিত তারপর চায়ের প্রতি তৎকালীন  বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের মানুষকে প্রভাবিত করতে থাকে। এর পরবর্তীতে চা হয়ে যায় আপ্যায়নের একটি মাধ্যম যেমন বাড়িতে কোন অতিথি আসলে তাদের প্রথমে আপ্যায়ন করা হতো চা দিয়ে।
মালনীছড়া চা বাগান




তথ্যমতে, একজন ইংরেজ লর্ড হার্ডসন ১৮৫৪ সালে প্রায় ১৫০০ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠা করেন মালনীছড়া চা বাগান যেটি সিলেট বিমানবন্দর থেকে সল্প দূরত্বে ও লাক্কাতুরা চা বাগান, আলী বাহার চা বাগানের পাশেই অবস্থিত।


এই বাগানটি রহস্যময় হওয়ার পিছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে যদিও এগুলোকে অনেকে গুরুত্ব দেননা। মালনীছড়া চা বাগানের আবাদানি নামক জায়গা থেকে মালনীছড়া গেইট পর্যন্ত প্রায় ১ মাইল জায়গায় কোন ধরনের নেটওয়ার্ক কাজ করে না চারপাশে নেটওয়ার্ক টাওয়ার থাকা সত্বেও। আর এই জায়গাতে বছরের ১২ মাসই ঠান্ডা বাতাস থাকে। হঠাৎ মাঝেমধ্যে বনের ভিতর বিভিন্ন ধরনের হিংস্র প্রাণীর পায়ের ছাপ পাওয়া যায়। বনের ভিতর বিষধর সাপ, বানর, পাখি ও শিয়ালের আনাগোনা রয়েছে। লোকমুখে বলা হয়, এই জায়গা দোষী ও ভয়ংকর হয়ে উঠে রাতের বেলায় কারণ এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কবরস্থান রয়েছে এমনকি রাস্তা যে দিক দিয়ে গেছে এগুলো আগে কবরস্থান ছিল। আবার সুন্দর পিচের রাস্তা ফুলে উঠে, যতই মেরামত করা হক না কেন রাস্তা ফুলে উঠে। তাই, প্রায়শই এই রাস্তাতে ভয়ংকর দূর্ঘটনা ঘটে থাকে।
মালনীছড়া চা বাগানের ভিতর ক্যাকটাস




যাইহোক, ছবি তোলার জন্য এই বাগানটি একটি আদর্শ জায়গা। রাস্তার পাশ এর চেয়েও বাগানের ভিতরের দৃশ্য অনেক সুন্দর। আঁকাবাকা পথ আর উঁচুনিচু পাহাড় বা টিলা ঢেউয়ের মতো বাগানের চারপাশ। বাগানের ভিতর ছবি তুলতে হলে বাগানে চা শ্রমিকদের কিছু বকশিস দিলেই হবে আর এখানে সংকর দা নামক এক চা শ্রমিক আছেন উনি বাগানের বাবু তার কাছে গেলে তিনি পুরো বাগান ঘুরে দেখাবেন।


বাগানের এক পাশে রয়েছে চায়ের চারা গাছ উৎপাদনের কর্মকান্ড। এখানে ২টি পদ্ধতিতে চায়ের চারা গাছ উৎপাদন করা হয়। যেমন বীজ থেকে ও কলুম থেকে চারা গাছ। আমি আগে কখনো চায়ের বীজ দেখিনি যেটি বাগানে সচরাচর দেখা যায় না। গাছ বুড়ো হলে অগ্রাহায়ন মাসে চায়ের গাছে বীজ ধরে।  বেশিরভাগ চায়ের বীজ আমদানি করা হয় ভারত থেকে এক একটি চায়ের বীজের বস্তার দাম ৮০০০-১০০০০ টাকা।
Malnichora tea garden tour




বাগানটি ইংরেজরা শুরু করলেও কালের পরিক্রমায় পাকিস্তান পরবর্তী বর্তমানে মালিকানায় রয়েছে। বর্তমানে বিখ্যাত ধনকুব রাগীব আলী এই বাগানের লিজদার।


এই ভ্লগটি যদি ভালো লেগে থাকে ও এই ধরনের শিক্ষামুলক ও ভ্রমণ ভ্লগ পড়তে চান তাহলে আমার ভ্লগটি শেয়ার করুন ও ফেইসবুক পেইজে ও ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত থাকুন। আবারো হাজির হবো পরবর্তী কোনো ভ্লগে ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। 
মালনীছড়া চা বাগানের নার্সারী



Post a Comment

1 Comments

  1. This seemingly small element can 우리카지노 seriously change your subsequent gaming experience. This end result of|as a end result of} of} many components, which we are going to inform you about under. Firstly, some software providers present their gamblers with particular bonus offers that will let you begin half in} online slots.

    ReplyDelete